প্রকাশিত: ০৪/০৭/২০১৬ ৮:৫২ এএম
কক্সবাজারে আইন-শৃংখলা বিষয়ক বিশেষ সভা
কক্সবাজারে আইন-শৃংখলা বিষয়ক বিশেষ সভা
কক্সবাজারে আইন-শৃংখলা বিষয়ক বিশেষ সভা

বিশেষ প্রতিবেদক
‘বিদেশীরা আমাদের হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের যোগান দেবে-আবার তাদের জানও দিতে হবে-এমনতো হতে পারে না। জঙ্গীদের দিয়ে এরকম জঘন্যতম কাজের মাধ্যমে দেশের অগ্রগতি বন্ধ করার পাঁয়তারা চলছে। এধরনের নৃশংসতা আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মোকাবেলা করতেই হবে।’ সভায় জঙ্গীবাদ রুখতে দেশী-বিদেশী জঙ্গীসম্পৃত্ত এনজিওর সাথে জড়িত কক্সবাজারের এনজিও কর্মীদের সনাক্ত করার উপর গুরুত্ব দেয়া হয়। সেই সাথে টেকনাফের বাহারছড়ার মত ষ্পর্শকাতর এলাকা থেকে কুতুপালং ও লিংকরোড পর্যন্ত এলাকায় বিদেশীদের আনাগোনা সহ এসবে জড়িত ব্যক্তিদের নজরদারিতে  আনারও দাবী উঠেছে। গতকাল রবিবার কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্টিত আইন শৃংখলা বিষয়ক বিশেষ সভায় জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে বক্তারা এই দৃঢ় প্রত্যয়ের কথা ঘোষণা করেন।

পবিত্র শবে কদরের আগের রাতে (শুক্রুবার রাত) রাজধানী ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারি নামের ষ্প্যানিশ একটি রেষ্টুরেন্টে জঙ্গী হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে এবং আসন্ন ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা ও আইন-শৃংখলা বিষয় সংক্রান্ত সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মো: আলী হোসেন সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী সংস্থারগুলোর পদস্থ কর্মকর্তারা সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসক সভার সূচনা বক্তব্যে অত্যন্ত দুঃখ প্রকাশ করে বলেন-‘ স্বাধীনতার ৪৫ বছরের মাথায় এদেশটি মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছিল যে মুহূর্তে তখনই অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে শুক্রবার রাতে জঙ্গী হামলার ঘটনাটি ঘটে। বিদেশী নাগরিকদের হত্যা করে যাতে বাংলাদেশকে এশটি অশার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করা যায় সেই প্রচেষ্টাই করা হচ্ছে।’ জেলা প্রশাসক বলেন-‘আমাদের চলমান অগ্রগতি আমাদেরকেই এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। যত বাঁধাবিঘœ সৃষ্টি হোক না কেন আমাদের ডিঙ্গিয়ে যেতে হবে সেইসব।’ তিনি বলেন-আসন্ন ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ব্যাপক সমাগমে যাতে কোন বিছিন্ন ঘটনার সুযোগ না পায় সেদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তিনি হোটেল মালিকদের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন-পর্যটকদের হয়রানি করার অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি হোটেল-মোটেলে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন সহ নিরাপত্তা জোরদার করার পরামর্শ দেন।

সভায় পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ বলেন, আসন্ন ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে কক্সবাজারে বিপুল সংখ্যক পর্যটক সমাগমের সম্ভাবনা রয়েছে। এসব পর্যটকদের নিরাপত্তা বিধানে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসতে হবে। কোন পর্যটক যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেদিকেও সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সেই সাথে নজর দিতে হবে পর্যটকের ছদœাবরণে কোন নাশকতার ঘটনা যাতে ঘটাতে না পারে।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা গত শুক্রবার গুলশান হামলার প্রসঙ্গ টেনে বলেন-মেট্রো রেল প্রকল্পের কাজ করতে এসে গুলশানে জঙ্গী হামলার শিকার হয়েছেন জাপানী নাগরিকরা। অথচ তারা আমাদের উন্নয়ন-অগ্রগতির সঙ্গী। এরকম ঘঁনা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায়না। মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে ৩৬ হাজার কোটি টাকার জাইকা অর্থায়ন সহ আরো হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন- এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে বিদেশীরা আমাদের দেশে আসছেন। বিদেশীরা আমাদের দেশের উন্নয়নে হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছেন। এজন্য আমাদের উচিত তাদের বেশী বেশী মেহমানদারি করা। কিন্তু সেই মেহমানদারির বদলে এখন আমরা তাদেরই হত্যা করছি নির্মমভাবে। এটা কি করে হয়-এটা কি করে আমরা মেনে নেব-প্রশ্ন এ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফার। তিনি জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান বলেন-বিএনপি-জামায়াত দেশকে অস্থির করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বহুদিন ধরে। গুলশান হামলা তারই ধারাবাহিকতা। তিনি কক্সবাজার সহ দেশের বিভিন্ন  স্থানে জঙ্গী রোহিঙ্গাদের কর্মকান্ড বন্ধ করতে আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর সদস্য সহ সচেতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সেই সাথে জঙ্গী কর্মকান্ড প্রতিরোধে সবাইকে একযোগে কাজ করার জন্য  তিনি আহ্বান জানান। মুজিব চেয়ারম্যান গত ক’দিন আগে জেলা প্রশাসন কর্তৃক হোটেল সী গালের সামনের বিউটিফিকেশন গুঁড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন-কেউ যদি ময়লা-আবর্জনার বদলে সৌন্দর্যের প্রতীক গড়ে তুলে আর সেটিই যদি গুঁড়িয়ে দেয়ার কাজটি অন্তত প্রশাসনের হাত করা হয় তাহলে এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কি হতে পারে।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে কক্সবাজার মুক্তিযোদ্ধা কম্যান্ড কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার মোহাম্মদ শাহজাহান, জেষ্ট্য সাংবাদিক তোফায়েল আহমদ ও মুহাম্মদ আলী জিন্নাত, সাগর পাড়ের তারকা হোটেল মালিক মাসুম ইকবাল, হোটেল-মোটেল ও রেষ্ট হাউজ সংগটনের নেতা আবুল কাশেম সিকদার, বাদল বড়–য়া ও কাজী রাসেল আহমদ সহ হোটেল মালিক ও প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।

পাঠকের মতামত

ঐক্যবদ্ধ থেকে দুর্বৃত্তদের কালো হাত ভেঙে দিতে ১ ঘণ্টাও লাগবে না :মিজানুর রহমান আজহারী

জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেছেন, আবহমানকাল থেকে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, আমরা মুসলিম, ...

সভাপতি মোঃ হোবাইব -সাধারণ সম্পাদক ফোরকান-সাংগঠনিক কামাল মহেশখালীতে লবণ চাষি ও ব্যবসায়ী সংগ্রাম পরিষদ গঠিত

লবণ উৎপাদন বৃদ্ধি ও আমদানী নয়, নায্যামূল্যাসহ রপ্তানির লক্ষে গঠিত হয়েছে কক্সবাজারের মহেশখালীতে লবণ চাষি ...